চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে ব্রুজের মাঠে ৩-৩ গোলের ড্রয়ের পর আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েছে হান্সি ফ্লিকের খেলার পরিকল্পনা। বার্সেলোনার এই ফলাফল যেন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ফ্লিকের কৌশল আসলেই কার্যকর, নাকি আত্মঘাতী?
জার্মান কোচের পরিচিত দর্শন, হাই লাইন ডিফেন্স আর অ্যাটাকিং প্রেসিং। এই পদ্ধতিই তাকে গত মৌসুমে সফলতার পথে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মৌসুমের শেষভাগে প্রতিপক্ষরা তার কৌশল বুঝে ফেলায় সেই পরিকল্পনা বারবার বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। নতুন মৌসুমেও কিছুটা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করলেও, ফ্লিক নিজের ‘সাহসী’ স্টাইল থেকে সরে আসেননি। এর ফলেই ব্রুজের বিপক্ষে পুরো সিস্টেমটাই যেন ভেঙে পড়ে।
সমালোচকদের মধ্যে সবচেয়ে কড়া ছিলেন নেদারল্যান্ডসের কিংবদন্তি রুড গুলিত। বিইন স্পোর্টসে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বারবার এমন ব্যর্থ পরিকল্পনায় কেন অটল থাকা? এটা আত্মঘাতী (কামিকাজে) ফুটবল।’ গুলিতের এই মন্তব্যই নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে ফ্লিকের প্রকল্প নিয়ে।
বার্সার সবচেয়ে বড় সমস্যা স্পষ্ট -রক্ষণভাগের ভঙ্গুরতা। মৌসুমের শুরু থেকেই তাদের ‘ডিফেন্সিভ লাইন’ সমালোচনার মুখে। ১৫ ম্যাচে ২০ গোল হজম করেছে দলটি; এর মধ্যে ইউরোপীয় মঞ্চেই চার ম্যাচে ৭ গোল। ফ্লিকের আগ্রাসী প্রেসিং সিস্টেমে প্রতিপক্ষের প্রতিটি পাল্টা আক্রমণ যেন হয়ে উঠছে গোলের আমন্ত্রণ।
তবু নিজের দর্শন থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেননি ফ্লিক। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা বার্সেলোনা, আমাদের নিজস্ব ফুটবল আছে। আমি রক্ষণাত্মক হয়ে ১-০ তে জিততে চাই না। আমরা আমাদের দর্শন নিয়েই এগোবো, শুধু আরও ভালোভাবে প্রয়োগ করতে হবে।’
গুলিতের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন আরেক কিংবদন্তি ও সাবেক বার্সেলোনা তারকা থিয়েরি অঁরি। সিবিএস স্পোর্টসে তিনি বলেন, ‘আর কতদিন আমরা একই ভুল দেখতে থাকব? প্রেসিং গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বল ছাড়া কেমন রক্ষণ করছো সেটাও জরুরি। শুধু বল দখল নয়, গোলরক্ষাও দরকার। প্রতিপক্ষ যখন দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ করে, তখন তোমাকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে প্রতিরোধ করতে হয়।’