স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধকে নিচে নামিয়ে দিয়ে চব্বিশের আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারা এখন চব্বিশের জুলাই আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায়। চব্বিশের যে আন্দোলন, সেটা আমরা ১৫ বছর ধরে করেছি, একদিনে নয়। আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করার জন্য, হাসিনাকে উৎখাত করার জন্য সংগ্রাম করেছি। মুক্তিযোদ্ধারা যেমন সংগ্রাম করেছিলেন, আমরাও তেমন সংগ্রাম করেছি।
তিনি বলেন, আজ এককভাবে কেউ কৃতিত্ব দাবি করলে, আমরা তা মানতে রাজি নই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই যে জুলাই সনদ আমরা পাস করেছি, আপনাদের মনে আছে, পার্লামেন্টের সামনে বৃষ্টি হচ্ছিল, ছাতা ধরে পাস করেছি, সই করেছি। ওইখানে আমরা যে বিষয়গুলো সই করেছি, সেখানে বলা হয়েছিল, সব রাজনৈতিক দল যেগুলোতে একমত সেগুলো সই হয়ে গেল। যেসব বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে না, তারা আপত্তি দেবে। সেটাকে বলা হয় ‘নোট অব ডিসেন্ট’। সেই নোট অব ডিসেন্ট লিপিবদ্ধ করা এবং সেটা এখানে রাখা হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন উনারা যেটা প্রস্তাব উত্থাপন করলেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে, সেখানে নোট অব ডিসেন্টের কোনো কথাই নাই। তারা আবার নতুন করে কিছু বিষয় ওখানে নিয়ে এসেছে। এটা অন্যায়, জনগণের সঙ্গে নিঃসন্দেহে প্রতারণা। তারপরেও একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা একটা প্রেস কনফারেন্স করে বিষয়টি বলেছি, আমরা রাস্তায় যাইনি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কোনো প্রতিবাদ করিনি। আমরা প্রধান উপদেষ্টা বাড়ি ঘেরাও করিনি বা নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করিনি।
‘একটি রাজনৈতিক দল জোট বানিয়ে বিভিন্নভাবে এই সরকারকে বাধ্য করতে চায়, তাদের কথাই শুনতে হবে। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার। আমরা যেটা সই করেছি। সেটার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই গ্রহণ করব। কিন্তু যেটা সই করিনি সেটার দায়-দায়িত্ব আমরা নেব না। আমরা চাই এই বিষয়গুলো একটু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হোক।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ঘোষণা অনুযায়ী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। পিআর হবে কি না, ওটা আগামী পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। গণভোটের প্রসঙ্গে আমরা রাজি হয়েছি। আলাদা করে গণভোটের প্রয়োজন ছিল না, কিন্তু আমরা বলেছি নির্বাচনের দিনই গণভোট করা হোক, এতে খরচ কমবে। কারণ আলাদা গণভোটে প্রায় হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। তাই নির্বাচনের ব্যালটে দুটি বিষয় থাকবে—একটি সংসদ নির্বাচন, অন্যটি গণভোট। এটা ছিল একটি যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত। এটা না করে এখন আবার তারা গণভোট আগে হতে হবে। তারপরে নির্বাচন হবে। এটা আপনারাই বলছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আজকে কাগজে দেখলাম, আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় বন্ধু মানুষ তাহের সাহেব, তিনি তার এলাকায় আমাদের দোষারোপ করেছেন—আমরা নাকি নির্বাচনকে বাধা দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত যত বাধা এসেছে, সব আপনারা করেছেন। আপনারা পিআরের দাবি নিয়ে এসেছেন। যেটা আলোচনায় বা প্রস্তাবে ছিল না। এখন জোট পাকিয়ে রাস্তার মধ্যে আন্দোলন করছেন এবং ধমক দিচ্ছেন আজকেই করতে হবে, তাহলে নির্বাচন করতে দেবো না। এটা হচ্ছে মানুষকে বোকা বানানো।