৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসকে সশস্ত্র দেখতে চায়: জরিপ

Date:

ইসরায়েলে হামাসের হামলার কারণে গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে তেল আবিব। গত দুই বছর ধরে সেখানে চলছে নির্মম গণহত্যা। যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলের হামলা বন্ধ হয়নি। নানা অজুহাতে গাজায় নির্বিচারে রক্তক্ষয়ী হামলা চলছে।

ধারণা করা হচ্ছিল, ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভে চাপা পড়বে হামাস। কিন্তু, দেখা গেল উল্টো চিত্র।

ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ বাসিন্দা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন। তারা গভীরভাবে বিশ্বাস করেন যে ট্রাম্পের শান্তি প্রক্রিয়া মেনে ইসরায়েল গাজায় চলমান সংঘাত স্থায়ীভাবে বন্ধ করবে না।

শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নিরস্ত্র করার যে কথা বলা হয়েছে তাও মানতে চান না বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি। গত ২২ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের (পিসিপিএসআর) চালানো জরিপে দেখা গেছে, ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকায় প্রায় ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন হামাসের অস্ত্র ছাড়া উচিত নয়। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এমন দাবি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়াদের ৭০ শতাংশ মনে করেন যে হামাসের হাতে অস্ত্র থাকলে যদি ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করে তবুও হামাস যেন অস্ত্র না ছাড়ে।

হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিমতীরে বেশি। সেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা হামাসের হাতে অস্ত্র দেখতে চাওয়ার কথা বলেছেন। অথচ, পশ্চিমতীর শাসন করছে হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন ফাতাহ।

ইসরায়েলি গণহত্যার শিকার গাজা উপত্যকার ৫৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা করেছেন।

এ ছাড়াও, ৬২ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন না যে ট্রাম্পের পরিকল্পনা সফল হবে। এই পরিকল্পনা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবে না বলে মনে করেন তারা। পশ্চিমতীরের ৬৭ শতাংশ ও গাজার ৫৪ শতাংশ ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছেন।

প্রতিবেদন অনুসারে, ১২ শ জনের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়। তাদের ৭৬০ জন পশ্চিমতীর ও ৪৪০ জন গাজার বাসিন্দা। জরিপটি গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের প্রতি ৫ জনের ৪ জন ফাতাহ নেতা মাহমুদ আব্বাসকে আর ক্ষমতায় দেখতে চান না। তারা চান তাদের প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করুক। ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিমতীরে ফাতাহর শাসন থাকলেও সেখানে হামাসের জনপ্রিয়তা বেশি।

জরিপ অনুসারে, ফিলিস্তিনের ৩৫ শতাংশ বাসিন্দা হামাসকে সমর্থন করেন। বিপরীতে, ২৪ শতাংশ ফিলিস্তিনি ফাতাহর সমর্থক। এ ছাড়াও, ৩২ শতাংশ ফিলিস্তিনি বলেছেন যে তারা এই দুই সংগঠনের কোনোটিকেই পছন্দ করেন না।

গাজায় যুদ্ধবিরতির পর ৫৩ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন—২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণে হামাসের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী হামলা ‘সঠিক’ ছিল। তাদের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিমতীরের বাসিন্দা ৫৯ শতাংশ ও গাজার বাসিন্দা ৪৪ শতাংশ।

এ ছাড়াও, ফিলিস্তিনিদের ৬০ শতাংশ হামাসের ভূমিকায় খুশি। তাদের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিমতীরের বাসিন্দা ৬৬ শতাংশ ও গাজার বাসিন্দা ৫১ শতাংশ। জরিপ অনুসারে, হামাসের জনপ্রিয়তা গাজার তুলনায় ইসরায়েল অধিকৃত ও ফাতাহ শাসিত পশ্চিমতীরেই বেশি।

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

মানুষকে প্রতিস্থাপন নয়, ব্যবসায়ে যোগাযোগ বাড়াতে সহায়তা করবে এআই

একটা নীরব পরিবর্তন এখন ব্যবসার জগৎ পাল্টে দিচ্ছে। কেবল...

স্থানীয় নেতৃত্ব, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ: জলবায়ু সহনশীলতার অগ্রযাত্রায় ইউনিয়ন পরিষদ

গত সপ্তাহে একটি সেশনে মডারেটর হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ...

প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া হয়েছিল ইয়াশ–তটিনীর?

পরিচালক শিহাব শাহীন ড্রামা, থ্রিলার, রোমান্টিক গল্পে কনটেন্ট বানাচ্ছেন...

চিড়িয়াখানায় প্রাণীর প্রতি মানবিক আচরণ করা হয় না: ফরিদা আখতার

চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের প্রতি মানবিক আচরণ করা হয় না বলে...