স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের চলচ্চিত্রের স্বর্ণালি যুগের নায়িকা সুচরিতা। তার পদচারণা ছিল সামাজিক, রোমান্টিক, অ্যাকশনসহ সব রকমের চলচ্চিত্রে।
তবে রুপালি পর্দায় বিশেষ করে সামাজিক চলচ্চিত্রে নিজের অভিনয় শৈলী দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ গুণী অভিনয়শিল্পীর জন্মদিন আজ।
শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় জগতে পা রাখলেও ১৯৭২ সালে আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘স্বীকৃতি’ চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু হয় সুচরিতার। চাষী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় হাঙর নদী গ্রেনেড সিনেমায় অভিনয় করে ১৯৯৭ সালে পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
নায়ক ওয়াসিম, রাজ্জাক, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চন, জসিম, মাহমুদ কলিসহ অনেক নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত সিনেমার গান মানুষের মনে দাগ কেটে আছে এখনো ।
নায়ক রাজ রাজ্জাক ও সুচরিতা জুটি হয়ে অভিনয় করেন কাজল লতা সিনেমায় । এই চলচ্চিত্রেরই আলোচিত গান- এই রাত ডাকে, ওই চাঁদ ডাকে। তেমনই আরেকটি জনপ্রিয় গান- ও আমার রশিয়া বন্ধুরে। সমাধি চলচ্চিত্রের এই গানটিতে সুচরিতার বিপরীতে ছিলেন নায়ক উজ্জ্বল।
‘সুচরিতা মেধাবী একজন শিল্পী । অনেক সুপারহিট সিনেমা করেছেন । দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছেন । যে কোনো চরিত্রে মিশে যেতেন অনায়াসে’- বলেন উজ্জ্বল।
সুচরিতা ও সোহেল রানা জুটি হয়ে অভিনয় করেন জীবন নৌকা চলচ্চিত্রে। যেটির ‘তুমি তো এখন আমারই কথা ভাবছো’, ‘ওরে ও জান রে’, ‘ভুলো না আমাকে ভুলে যেও না’ গানগুলো আজও জনপ্রিয়।
সোহেল রানা বলেন, ‘আমার সিনেমায় যারা নায়িকা হয়েছেন, সুচরিতা তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। মিষ্টি হাসির একজন মানুষ তিনি। পর্দায় তার উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মতো। নিঃসন্দেহে তিনি একজন ভালো শিল্পী।’
ঢাকার চলচ্চিত্রে এমন আরও অনেক গানের মধ্য দিয়ে মানুষের মনে গেঁথে আছেন সুচরিতা। জসিমের সঙ্গে জুটিতে আদিল চলচ্চিত্রের ‘তুমি যে মোর ভাবনা’ কিংবা ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে আঁখি মিলন চলচ্চিত্রের ‘কথা বলব না বলেছি’ ও ‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে’ গানগুলোর আবেগ কমেনি এখনো।

