বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আপনাদের চারপাশে সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গুপ্ত স্বৈরাচার ওত পেতে রয়েছে। সুতরাং নিজেদের মধ্যে বিবাদ-বিরোধ এমন পর্যায়ে নেওয়া ঠিক হবে না যেন প্রতিপক্ষ এর সুযোগ নিতে পারে।
আজ রোববার রাতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্যপদ গ্রহণের কর্মসূচির জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শিগগির দলের একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে বলেও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, ‘শিগগির পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনীত দলীয় প্রার্থীদের নাম আমরা জানিয়ে দেবো দলের পক্ষ থেকে। দল যাকে যে আসনে নমিনেশন দেবে বা দেয় অনুগ্রহ করে তাকে বিজয়ী করে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রত্যেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ দয়া করে কাজ করবেন।’
তারেক রহমান বলেন, ‘প্রতি আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী। আপনারা যারা নিজ নিজ এলাকায় জনগণের সমর্থন পেতে গণসংযোগ করছেন, আপনারা সবাই কিন্তু শেষ পর্যন্ত শহীদ জিয়ার অনুসারী, খালেদা জিয়ার সৈনিক, বিএনপির কর্মী, ধানের শীষের সমর্থক। মনে রাখবেন, ধানের শীষ জিতলে আপনি জিতেছেন বা জিতছেন বা জিতবেন। বিজয়ী হবে দেশ এবং গণতন্ত্র।’
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সারাদেশের বিএনপির লাখো- কোটি সমর্থক বিব্রত হয়, এমন কোনো কাজ আপনারা দয়া করে করবেন না। জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন।’
তারেক বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত জানানোর পর নির্বাচন কমিশন যথাসময় নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করবে। জনগণের বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গণতন্ত্রকামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে।’
‘এর অংশ হিসেবে দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে,’ বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘জনসমর্থিত এবং জনপ্রিয় দল হওয়ার কারণে প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এটি অবশ্যই গৌরব এবং সম্মানের। দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেককে প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়।’
‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথে সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন,’ যোগ করেন তিনি।
তারেক বলেন, ‘বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। উদ্বেগ ও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’
‘তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, তাহলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ ছিল না। আর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে জনমনে কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তারেক বলেন, ‘এমন তো হবার কথা ছিল না। নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয় সন্দেহ গণতন্ত্রের উত্তোরণের পথকে হয়ত বা সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে।’